রঙিন

আমি বিশ্বাস করি,অনুভূতির বর্ণ আছে...আমাদের মস্তিষ্কের কতশত নার্ভ-এক্সন-ডেনড্রাইট এর মাঝে যাতায়াত করা ইলেকট্রিক সিগন্যালগুলোর নিজস্ব রং থাকে..এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।


শৈশবে প্রিয় কোনো খেলনা আব্বু আম্মু কিনে দিলে খুউব খুশি লাগতো...আমি জানিনা সেই অনুভূতির রং কী...স্কুলে প্রাইমারি কালারস শেখাতো...নীল-লাল-সবুজ..সময়ের কাঁটা ঘুরতে ঘুরতে বড় হলাম আমরা সবাই...নীল-লাল-সবুজ একসাথে মিলেমিশে অনেকগুলো রংয়ের একটা প্যালেট হয়ে গেল...তাতে এককোণায় স্কুলমাঠের উদ্দাম ছুটোছুটি আর খেলাধুলার উজ্জ্বল লাল...তার পাশেই খুব বৃষ্টিতে কারো কথা ভেবে মন খারাপ করা ধূসরের ছোঁয়া....প্রেমিকার চোখে চোখ রেখে দুজন দুজনের মনের কথা পড়ে ফেলার রং আছে...সেই রং সম্ভবত হলুদ...মন ভালো করে দেওয়া হলুদ..!কৈশোরে সাদা স্কুলশার্ট আর নীল জামা পড়া আমাদের চোখে চোখ পড়াতে লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে ফেলাটা কী গোলাপি রং বলা যায়?হয়তো।প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির কঠিন সমীকরণ মেলাতে না পারা আমরা কখন যেন বড় হয়ে গেছি।এত দ্রুত বদলে যাওয়া আশেপাশের সাথে  খাপ খাইয়ে নেওয়া আমাদের মাঝেমাঝেই ডিপ্রেশনের কালো চাদর ঘিরে ধরে..তখন আমাদের মনের ক্যানভাস একেবারেই নিকষ কালো,তাইনা?


জীবনটাকে আমার সবসময়ই রংয়ের প্যালেট মনে হয়েছে...এখন একটু লাল তুলির আচড় পড়ছে তো পরক্ষণেই কষ্টের নীল তুলির একটানে সমস্তটা নীলাভ হয়ে যাচ্ছে...এতবড় একটা ক্যানভাসের কতশত রং এর মাঝে আমরা কোন কোন রং বেছে নিচ্ছি আমাদের মন-মননের মাইক্রোস্কোপে,সেটা কুহক হয়েই রয়ে যায়।


আমরা কী ঠিক রংটা বেছে নিতে পারি সবসময়?বোধহয় না!তবু অনুভূতির কালার কম্বিনেশন মেলানোর চেষ্টা করে যাই সবাই।


প্রতিদিন,প্রতিনিয়ত।

Comments

Popular Posts